বার্তা সংস্থা মেহের-এর বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠন নুজাবা মার্কিন সামরিক ও কারিগরি কমিটির মধ্যে নতুন দফা আলোচনা শুরু করার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে জানিয়েছে, বিদেশি বাহিনীর উপস্থিতি বা প্রত্যাহারের জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরির লক্ষ্যে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরাক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কারিগরি কমিটির মধ্যে নতুন দফা আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরাকে যুদ্ধ মিশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখনও দেশটির 'আইন আল-আসাদ' এবং 'আল-হারির' এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলোতে উপস্থিতি বজায় রেখেছে মার্কিন বাহিনী। এই উপস্থিতি বজায় রাখার উদ্দেশ্য নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলা করা নয় বরং কৌশলগত স্বার্থে এটা করা হচ্ছে। ইরান, তুরস্ক ও সিরিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর কথা মাথায় রেখে এই উপস্থিতিকে বজায় রাখতে চায় আমেরিকা।
এই উপস্থিতির ধারাবাহিকতা কেবল ইরাকের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেনি বরং এ কারণে সেদেশে অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে, সীমান্ত অস্থিতিশীলতাও বিরাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিচ্ছে যে, তাদের সেনা প্রত্যাহার করা হলে অর্থনৈতিক বা কূটনৈতিক সংকটে পড়বে ইরাক।
ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলো মার্কিন দখলদার বাহিনীর অবস্থানকে দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী এবং সংসদীয় প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে মনে করে। এমন পরিস্থিতিতে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শিয়া আস-সুদানির সরকার মার্কিন সেনা বহিষ্কারের প্রক্রিয়া কার্যত বিলম্বিত করায় সরকারের ওপর প্রতিরোধ সংগঠনগুলো চাপ বাড়াতে পারে।
বিদেশি সেনা বহিষ্কারের বিষয়ে সংসদীয় প্রস্তাব বাস্তবায়নে শিয়া আস সুদানি সরকার এবং তার আগের সরকারগুলোর নিষ্ক্রিয়তার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক পরিণতির বিষয়ে ভীতি। ইরাক মার্কিন আর্থিক চ্যানেলের উপর নির্ভর করে এগোচ্ছে। ইরাকি অর্থনীতি মূলত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ থেকে ডলার স্থানান্তরের অনুমতির ওপর নির্ভরশীল।
এই আর্থিক নির্ভরতা কাঠামোগত চাপের একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে যার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইরাকের অভ্যন্তরীণ ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে এবং বাগদাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা মূলত অর্থনৈতিক নির্ভরতা থেকে সরে আসার ওপর নির্ভরশীল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইরাকি সেনাবাহিনী শক্তিশালী করার পথে বাধা সৃষ্টি করে এসেছে। বিমান প্রতিরক্ষা এবং ড্রোন প্রযুক্তির মতো গুরুত্ব ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে দিচ্ছে না আমেরিকা। এটা স্পষ্ট, ওয়াশিংটন চায় না ইরাক একটি স্বাধীন এবং প্রতিরোধে সক্ষম দেশে পরিণত হোক। তারা চায় ইরাক একটি নির্ভরশীল, নিয়ন্ত্রণযোগ্য দেশ হিসেবে থাকুক।#
Your Comment